প্রকাশিত: Fri, Jan 6, 2023 4:19 PM
আপডেট: Tue, Jul 8, 2025 11:19 PM

সরকারের বর্তমান মেয়াদের চার বছর পূর্তিতে ভাষণ

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে এমন অপপ্রচারকে প্রশ্রয় দিবেন না: প্রধানমন্ত্রী

সালেহ্ বিপ্লব: জাতির উদ্দেশ্যে শুক্রবার সন্ধায় দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৪ বছর ধরে সরকার পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগ। কী দিতে পেরেছি, তার বিচার-বিশ্লেষণ দেশবাসী করবেন। ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় আসি, সারাবিশে^র তখন মন্দা চলছে। দেশে দ্রব্যমূল্য ছিলো আকাশচুম্বী, বিদ্যুৎ-তেল-গ্যাসের সংকট ছিলো চরমে। সেই জায়গা থেকে দেশকে আমরা এগিয়ে এনেছি। নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিকল্পিত উন্নয়ন করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি, এবার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। বিটিভি, বাসস

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলসমূহ এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এমন কোন উদ্ভট ধারণাকে প্রশ্রয় দিবেন না এবং ইন্ধন যোগাবেন না। 

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন এই বছরের শেষে বা পরের বছরের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এখন লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, স্বাধীনতাবিরোধী, ক্ষমতালোভী, জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনকারী আর পরগাছা গোষ্ঠির সরব তৎপরতা শুরু হয়েছে। এদের লক্ষ্য ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি করে পিছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা। কাজেই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা লুণ্ঠন করা অর্থ দিয়ে দেশে-বিদেশে ভাড়াটে বুদ্ধিজীবী ও বিবৃতিজীবী নিয়োগ করেছে। তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যে ও ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এদের মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হবেন না।

তিনি বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তার সরকার এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বাংলাদেশে এই প্রথম একটি আইন পাশ করা হয়েছে। সেই আইনের আওতায় সার্চ কমিটি করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। সরকার সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল, জনগণের শান্তিতে বিশ্বাসী, জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। জনগণ ভোট দিয়ে বিজয়ী করলে আওয়ামী লীগ দেশ গড়ার জাতীয় দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে। যদি বিজয়ী না করে, তাহলে আমরা জনগণের কাতারে চলে যাব। তবে, যেখানেই থাকি, আমরা জনগণের সেবা করে যাব। 

কিন্তু ষড়যন্ত্র করে কেউ যাতে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ যাতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে মানুষের জানমালের এবং জীবিকার ক্ষতিসাধন করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। 

সরকারপ্রধান দেশের উন্নয়নের গৃহীত পদক্ষেপের বর্ণনা দেন। বিএনপির রেখে যাওয়া সামগ্রিক অবস্থার সঙ্গে বর্তমান উন্নত পরিস্থিতির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি ভাষণ শেষ করেন সুকান্ত ভট্টাচার্য্যরে ছাড়পত্র কবিতার শেষ চার লাইন দিয়ে: যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে সরব জঞ্জাল, এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার। সম্পাদনা: খালিদ আহমেদ